01 February 2014


সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ব্যাপকহারে কল ড্রপ হচ্ছে। আর এর প্রতিকার করতে উদ্যোগ নিয়েছে টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে কমিশন। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কল ড্রপ নামাতে হবে ৩ শতাংশে এবং ৮ সেকেন্ডের মধ্যে সফল কল হতে হবে। আর এর ওপর ভিত্তি করেই পারফম্যান্স বিবেচনায় মোবাইল অপারেটরের রেটিং হবে।

বর্তমানে গ্রাহক অভিযোগ জানাতে ফোন করলে বেশ কয়েক মিনিট অপেক্ষা করেও অনেক সময় অভিযোগ জানাতে পারে না। এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতেই এ বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে বলে জানান নির্দেশনা প্রণয়ন কমিটিতে থাকা এক কর্মকর্তা।
এক্ষেত্রে বিটিআরসি স্বল্প মেয়াদী (২ বছরের কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন যোগ্য) এবং দীর্ঘ্য মেয়াদী বেশ কিছু প্যারামিটার ঠিক করে দিয়েছে।

নির্দেশনার এক পর্যায়ে বিটিআরসি বলছে, দূর্বল নেটওয়ার্ক, অব্যহত কল ড্রপ এবং গ্রাহকের অসন্তুষ্টির বিষয়টিকে তারা বিবেচনায় নিয়েছেন। আর এ কারণেই এমন একটি নির্দেশনা তৈরী করেছেন তারা। অভিযোগ গ্রহনের ক্ষেত্রে ইলেক্ট্রনিক বা এসএমএস সংক্রান্ত অভিযোগে শতভাগ ক্ষেত্রে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে আমলে নেওয়া এবং ভয়েস অভিযোগের ক্ষেত্রে তা ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আমলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে অ্যামটব দাবি করেছে যথাক্রমে ৬০ সেকেন্ড ও ১৮০ সেকেন্ড।

এক্ষেত্রে একসিলেন্ট, গুড, ফেয়ার, পুয়োর এবং ব্যাড-এই পাঁচটি ধাপ করা হয়েছে। নূন্যতম ৯০ শতাংশ নম্বর না পেলে ফেয়ার বা তৃতীয় ধাপে যেতে পারবে না অপারেটররা। বিটিআরসি বলে দিয়েছে, মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের ফোন করার ক্ষেত্রে প্রতি ১০০ চেষ্টায় ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে সফল হতে হবে। সেটিও হতে হবে ৮ সেকেন্ডের মধ্যে। না হলে সেটি অপারেটরের নেতিবাচক পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। গ্রাহকদের অভিযোগের হার কোনো অবস্থায় আড়াই শতাংশের বেশি উঠতে পারবে না। এবং দুই বছরের মধ্যে তা এক শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে হবে। কল ড্রপের হারও এখন তিন শতাংশের নিচে থাকতে হবে আর দুই বছরের মধ্যে তা দুই শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে হবে।

বিভাগীয় শহর, জেলা এবং উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিটিআরসিকে দিতে হবে অপারেটরদের। পরে বিটিআরসি তা অডিট করে দেখবে। আর তার ভিত্তিতে পরে রেটি প্রকাশ করবেন তারা। মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো নির্দেশনাকে স্বাগত জানালেও এক্ষেত্রে দেশী বাস্তবতা এবং আন্তর্জাতিক অনুশীলনকে বিবেচনায় নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে।

অন্যদিকে গত ২ জানুয়ারি কমিশন বৈঠকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব কোনো কোনো ক্ষেত্রে খানিকটা বাড়তি সময় চায়। তবে বিটিআরসি’র শেষ পর্যন্ত সেটি গ্রহন করেনি। এর বাইরে কোন অপারেটরের নেটওয়ার্ক কনজেশানের অবস্থা কি? ভয়েস কোয়ালিটির অবস্থা কি-এ সবই রয়েছে এই ইন্ডিকেটরে।

পারফম্যান্সের ভিত্তিতে মোবাইল ফোন অপারেটরদের রেটিং প্রকাশ করবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। কোয়ালিটি অব সার্ভিস নির্দেশনার আলোকে অপারেটরগুলোর কার কি পারফম্যান্সে তার ভিত্তিতেই তৈরী হবে এই রেটিং। প্রতি মাসের শেষে যা প্রকাশ করা হবে। গত ২১ জানুয়ারি বিটিআরসি কোয়ালিটি অব সার্ভিস সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। যদিও পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা হতে আরো সময় লাগবে। কিন্তু তারপরেও এই নির্দেশনায়ই গ্রাহক সেবার নূন্যতম মানদন্ড বলে দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

0 comments:

Post a Comment